ছবি: সংগৃহীত
নঈম নিজাম : খ্যাতিমান সাংবাদিক, সম্পাদক এম জে আকবরের বিজেপিতে যোগদানে বিস্মিত হয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির প্রথমবারের মতো দায়িত্ব গ্রহণের সময় তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। হিসাব মেলাতে পারছিলাম না। রাজীব গান্ধীর সঙ্গে আকবরের ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব ছিল। রাজীব তাঁকে কংগ্রেসের এমপি করেছিলেন। রাজীবের নিষ্ঠুর প্রয়াণের পর সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বনিবনা হয়নি। তিনি আবার মিডিয়ায় ফিরে এসেছিলেন। নতুন করে দায়িত্ব পালন করেছেন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দৈনিকে। ভারতীয় সাংবাদিকতাকে করেছেন উজ্জ্বল। বিজেপিতে যোগদান নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছিল। তিনি বললেন, ভূরাজনীতির পরিবর্তন ঘটিয়ে নরেন্দ্র মোদি কিছু করতে চান। তিনি আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর পর ভালো কিছু করতে যোগ দিয়েছিলাম। বিজেপির অন্যতম মুখপাত্র তাঁকে করা হলো। মোদির প্রথম ভোটের আগে বিভিন্ন ব্রিফিংয়ে তিনি নিয়মিত অংশ নিতেন। কথা বলতেন। বিজেপির থিঙ্কটাঙ্ক হিসেবে তিনি সামনে থাকতেন। বিশাল বিজয় নিয়ে ক্ষমতায় আসেন মোদি। ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান এম জে আকবর। হয়েছিলেন রাজ্যসভার সদস্যও। আকবর বিজেপির প্রচারের অনেক আধুনিকতার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন, আছেন।
বিজেপির এখন বেশ কয়েকজন মুখপাত্র আছেন। তাঁদের একজন গৌরব ভাটিয়ার। তিনি দলের বিভিন্ন শক্ত ইস্যুতে কথা বলেন। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে টকশোগুলোয় কারা অংশ নেবেন তা ঠিক করে দেওয়া হয় পার্টি থেকে। কারণে-অকারণে, যখন তখন পার্টির সাধারণ সম্পাদক কথা বলেন না। তৈরি করেন না হাস্যকর পরিবেশ। পররাষ্ট্রবিষয়ক বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন জয়শংকর। সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের বিলওয়ালকে কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেছেন তিনি। জবাব দিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসে ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক বড় ব্যবসায়ী মোদির সমালোচনার। সবার জবাবই ছিল কঠিন ভাষায়। সর্বশেষ বাংলাদেশ ইস্যুতে জয়শংকর কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, বিদেশি হস্তক্ষেপে বাংলাদেশের নির্বাচনে প্রভাব পড়বে না। কথা এভাবেই বলতে হয়। মতিঝিল শাপলা চত্বরে হেফাজত ইস্যুর সময় কঠিন ভাষায় এভাবে কথা বলেছিলেন আওয়ামী লীগের তখনকার সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তাঁর সেই হুঁশিয়ারি এখনো কানে বাজে। মুখপাত্রকে এভাবেই কথা বলতে হয়। সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে নরমগরম হতে হয়। সারা দিন টিভিতে চেহারা দেখানোর জন্য কথা বলে লাভ নেই। কথা বলতে হবে টু দ্য পয়েন্টে। জবাব দিতে হয় বাস্তবতার নিরিখে। প্রতিটি জবাবে থাকতে হবে মানুষের মনোযোগ।
মুখপাত্রদের সবাই ইতিবাচক ধারায় থাকেন তেমন নয়। অনেক মুখপাত্র নেতিবাচক ধারার রেকর্ড গড়ে পৃথিবীতে যুদ্ধ বাধিয়ে দেন। আবার অনেকে হয়ে ওঠেন মিথ্যাচারের সম্রাট। তাদের কোনো কিছুতে সত্যের লেশমাত্র থাকে না। ইরাকের একজন মুখপাত্র ছিলেন যুদ্ধের সময়। নাম সাইদ আল সাহাফ। তিনি ছিলেন সাদ্দামের তথ্যমন্ত্রী। তাঁর ব্রিফগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনতাম। তাঁর কথা শুনে মনে হতো আমেরিকার সঙ্গে ইরাকের যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হবে। আমেরিকাকে পরাস্ত করে ছাড়বে ইরাক। পরে দেখলাম সবই ফাঁকা আওয়াজ। বোগাস কথাবার্তা বলে নিজেদের ভিতরে সাহস রেখেছিলেন। ইরাকি সেনারা কয়েক ঘণ্টাও টিকতে পারেনি আমেরিকার দক্ষ, আধুনিক সেনাবাহিনীর কাছে। আমেরিকার সঙ্গে যুদ্ধ একাই মিডিয়াতে করেছেন সাহাফ। সামরিক বাস্তবতা ছিল ভিন্ন। সাদ্দামের বিশ্বস্ত সহচর সাহাফ ইরাকি জনগণের মনোবল রক্ষা করেছেন। আর কিছু না। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তাঁর সব কথা ছিল কাগুজে গসিপিং।
পৃথিবীতে হিটলারের মুখপাত্র গোয়েবলসের মিথ্যার রেকর্ড এখনো কেউ ভাঙতে পারেনি। তখন মানুষ মন দিয়ে রেডিও শুনত। গোয়েবলস রেডিও ব্যবহার করে গুজব ছড়াতেন। রাষ্ট্রীয় অর্থে জার্মানির ঘরে ঘরে রেডিও বিতরণ করেন গোয়েবলস। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে মিথ্যা প্রচারণা দিয়ে একাই জমিয়ে রেখেছিলেন। এ কারণে এখনো তাঁকে মিথ্যার রাজা হিসেবে ধরা হয়। জার্মান সেনারা যখন রাশিয়াতে বরফঝড়ে কাবু, লাল সেনাদের আক্রমণে নাস্তানাবুদ তখন গোয়েবলস বলেছিলেন, রাশিয়ার পাঁচ তারকা হোটেলে তাঁদের সেনারা ডিনার করছে। বিজয় উৎসব করছে। তারা পান করছে বিজয়ের রাশিয়ান ভদকা। রাশিয়ান সুন্দরী নারীরা তাদের সঙ্গ দিচ্ছে। পরে জানা গেল সব ফাঁকা আওয়াজ। মিথ্যার রাজা তাঁর মতো সব সাজাতেন। গুজবের ভিত্তি দীর্ঘ সময় থাকে না। সাময়িক আলোচনা হয়। তারপর সত্য বেরিয়ে আসে। গুজব হারিয়ে যায়। গুজবের জবাব দিতে হয় সত্য দিয়ে। সেই সত্য তুলে ধরার মাঝে একটা আর্ট থাকে। সবাই তা দেখাতে পারে না।
বড় দেশগুলো বাস্তবতার নিরিখে মিডিয়া মোকাবিলার বিভাগগুলোকে সাজিয়ে নেয়। আমেরিকার রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে আলাদা মুখপাত্র থাকেন। তাঁরা ব্রিফ করেন একটা স্মার্ট ভাবধারায়। জবাব দেন সরকারের সত্যিকারের নীতিমালা সামনে রেখে। সবকিছু তাঁরা ফেস করেন। কোনো কিছু আড়াল করেন না। ক্রাইসিস সময়ে তাঁরা থাকেন আরও সক্রিয়। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আমন্ত্রণে ২০০৬ সালের জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্র গিয়েছিলাম ইন্টারন্যাশনাল ভিজিটরস কর্মসূচির আওতায়। এক মাস ছিলাম যুক্তরাষ্ট্র সরকারের খরচে। সে সময় জানতে পেরেছি যুক্তরাষ্ট্র সরকার কীভাবে পরিচালিত হয়। তাদের সরকারের বিভিন্ন কাজ তুলে ধরা হয়েছিল দক্ষিণ এশিয়ার সাত সাংবাদিকের সামনে। পেন্টাগন, হোয়াইট হাউস, স্টেট ডিপার্টমেন্ট, জাতিসংঘ, মার্কিন বিচার বিভাগের কার্যক্রম, স্থানীয় সরকার, গ্রামের হোম হসপিটালিটি সব আমাদের ঘুরে দেখানো হয়। নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সিএনএন, এপিসহ বিভিন্ন মিডিয়া হাউসে। বাংলাদেশ থেকে আরও ছিলেন হাসনাইন খুরশিদ। তিনি তখন এনটিভিতে, আমি এটিএন বাংলায় (সফরের সময় এসটিভি ইউএস)। হোয়াইট হাউস, পেন্টাগন, স্টেট ডিপার্টমেন্ট কীভাবে কাজ করে, মুখপাত্ররা কীভাবে মিডিয়ার সামনে কথা বলেন সামনাসামনি দেখেছিলাম। তাঁদের করেছি অনেক প্রশ্ন। সবকিছু গোছানো, পরিপাটি। মিসৌরি স্কুল অব জার্নালিজমে সাংবাদিকতাবিষয়ক আমাদের ক্লাস করানো হয়। এ সফরকালে পাকিস্তানের সাংবাদিক মহসিন রাজা কঠিন প্রশ্ন করলেন হোয়াইট হাউসের মুখপাত্রকে। তাঁর প্রশ্নটি ছিল জেনারেল পারভেজ মোশাররফের ক্ষমতা গ্রহণের কয়েক ঘণ্টা পর মিডিয়া ব্রিফকালে প্রেসিডেন্ট বুশকে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন, কিছুক্ষণ আগে পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারি হয়েছে। বলা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ধনে জেনারেল মোশাররফ ক্ষমতা নিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট বুশ তখন পাশে থাকা প্রেস সেক্রেটারির দিকে তাকালেন। তাঁর কাছে জানতে চাইলেন, হু ইজ পারভেজ মোশাররফ? হোয়াট হি ডিড ইন পাকিস্তান? কী হয়েছে সেখানে? প্রেস সেক্রেটারি বললেন, সামরিক শাসন জারি হয়েছে।
পাকিস্তানি সাংবাদিক মহসিন রাজা হোয়াইট হাউস প্রতিনিধির কাছে জানতে চাইলেন, প্রেসিডেন্ট বুশ কি আসলে জানতেন না পাকিস্তানে কী হয়েছে? নাকি ভাব দেখালেন তিনি কিছু জানেন না। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এই সামরিক শাসনে জড়িত ছিল কি ছিল না প্রশ্ন তা নয়। প্রশ্ন হলো, কয়েক ঘণ্টা আগে পাকিস্তানে জারি করা সামরিক আইন প্রশাসকের নাম তোমার রাষ্ট্রপতি কি আসলেই জানতেন না? আড়াল থেকে স্টেট ডিপার্টমেন্ট বা সিআইএ কি সত্যিকারের অর্থে জড়িত ছিল না এই সামরিক ক্যুতে? জবাবে হোয়াইট হাউস প্রতিনিধি বললেন, প্রেসিডেন্ট না-ও জানতে পারেন তাৎক্ষণিকভাবে পাকিস্তান বা পৃথিবীর কোনো দেশে সংঘটিত ঘটনা। আমেরিকান প্রশাসন চলে একটা সিস্টেমের আওতায়। পাকিস্তানের মার্কিন দূতাবাসের পাঠানো খবরগুলো প্রথমে আসে স্টেট ডিপার্টমেন্টের সংশ্লিষ্ট শাখায়। জুনিয়র অফিসার তা পরীক্ষানিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দূতাবাসকে দিয়ে থাকেন। প্রয়োজন মনে করলে প্রথমে সংশ্লিষ্ট পরিচালকের দৃষ্টিতে আনেন। তিনি প্রয়োজন মনে করলে পাঠান সেক্রেটারির কাছে। এরপর সেক্রেটারি (মন্ত্রী) কাগজগুলো পরীক্ষা করে প্রয়োজন মনে করলে প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠান। এ কারণে কোন দেশে কে কখন সামরিক শাসন জারি করল তার জেনারেলের নাম প্রেসিডেন্ট না-ও জানতে পারেন। এটা নিয়ে বিস্ময়ের কিছু নেই। আর সেই প্রেস ব্রিফিংটি ছিল অভ্যন্তরীণ বিষয়ে। প্রেস সেক্রেটারি মঞ্চে আসার আগে এ কারণে বিষয়টি তাঁর দৃষ্টিতে না-ও আনতে পারেন।
আমেরিকার মতো ভারতের মুখপাত্ররা কথা বলেন সরকারের সত্যিকারের নীতি ও বাস্তবতার নিরিখে। অতিকথন ভারতেও হয় না। ব্রিফিং করার সময় ব্যক্তিগত কঠিন প্রশ্নের জবাব দিতে দেখেছিলাম ভারতের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদকে। দিল্লিতে গিয়েছিলাম ইন্ডিয়ান ওশান রিম অঞ্চলের সাংবাদিকদের একটা সম্মেলনে। কংগ্রেস তখন ক্ষমতায়। দিল্লির গুরগাতে সম্মেলনটি হচ্ছিল একটি হোটেলে। এক দুপুরে জানানো হলো, বিভিন্ন দেশ থেকে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন ভারতের নবনিযুক্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদ। আগের দিন তিনি শপথ নিয়েছেন। ভারতীয় কূটনৈতিক সাংবাদিকরা তাঁকে এখনো পাননি। আমাদের সঙ্গে কথা বলার আগে তিনি ভারতীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন হোটেলের একই ভেন্যুতে। তবে ভারতীয় সাংবাদিকদের ব্রিফ করার সময় আমরা থাকতে পারব। সে সময় কোনো ধরনের প্রশ্ন করতে পারব না। আমাদের সঙ্গে এরপর কথা বলার সময় প্রশ্ন করতে বাধা নেই। যথাসময়ে মন্ত্রী এলেন আমাদের হোটেলে। তিনি প্রথমে মুখোমুখি হন ভারতীয় সাংবাদিকদের। অনুষ্ঠান পরিচালনা করছিলেন মিডিয়া চালানোর দক্ষ ব্যক্তিত্ব হিসেবে খ্যাত, ডাকসাইটে কূটনীতিক আকবর উদ্দিন। তিনি ছিলেন তখন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র। আকবর উদ্দিনের পরিচালনায় শুরু হলো প্রশ্নোত্তর। ভারতীয় একজন সাংবাদিক হঠাৎ প্রশ্ন করলেন, মি. সালমান খুরশিদ, আপনি দুই দিন আগে ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী। শুধু রাহুল গান্ধীর সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের জেরে, তাঁর নেকনজরে গিয়ে এখন হুট করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এটা নজিরবিহীন ঘটনা ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। সারা দুনিয়ায় ভারতের বিশাল কূটনৈতিক অবস্থান সামলাতে প্রয়োজন একজন দক্ষ কূটনৈতিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মন্ত্রীর; যা আপনার নেই। রাহুল গান্ধীকে খুশি রাখার সামান্য সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর অভিজ্ঞতায় কীভাবে সামলাবেন পররাষ্ট্র বিভাগ? পিনপতন নীরবতা নিয়ে বসে আছি উত্তরের অপেক্ষায়। বাংলাদেশে এমন প্রশ্ন করলে মাননীয়রা মন খারাপ করতেন। উত্তর দিতে খোঁজ নিতেন কার লোক, কেন এমন প্রশ্ন। আকবর উদ্দিন তাকালেন সালমান খুরশিদের দিকে।
মন্ত্রী গম্ভীরতা নিয়েই বললেন, আপনার প্রশ্নটি ভালো। স্বাধীনতার পর থেকে ভারতের পররাষ্ট্র বিভাগ চলে একটা নীতিমালা নিয়ে। সরকার বদল হলে নীতিমালা ঠিক রেখেই ক্ষমতায় আসা দলটির নির্বাচনী অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়ন হয় জনগণকে অবহিত করেই। আমাদের একদল সফল অভিজ্ঞ কূটনীতিক আছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। দেশের প্রতি অঙ্গীকার বজায় রেখে তাঁরা কাজ করেন। কংগ্রেস একটা অভিজ্ঞ রাজনৈতিক দল। এ দলের নির্দিষ্ট কূটনৈতিক অবস্থান আছে; যা ধারাবাহিকভাবে বাস্তবায়ন করছেন আমাদের সফল কূটনীতিকরা। তাঁদের টিমে যুক্ত হলাম। সরকারের নির্ধারিত নীতি-আদর্শ বাস্তবায়নে সবার মতামত নিয়ে কাজ করব। এখানে কোনো সংকট-সমস্যা দেখি না। আমি একটি দলের প্রতিনিধি। নির্ধারিত কূটনৈতিক এজেন্ডাগুলো বাস্তবায়ন করাই আমার কাজ। এ কাজগুলো সারা দুনিয়ায় আমাদের পাঠানো কূটনীতিকরা করছেন। মন্ত্রী হিসেবে সবকিছুর সমন্বয় করতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
আজকাল মুখপাত্র নিয়ে বাংলাদেশেও কথা হচ্ছে। বলা হচ্ছে সরকারের ভিতরে সবাই কথা বলছেন। কারও সঙ্গে কারও সমন্বয় নেই। সব বিষয়ে সব মন্ত্রী কথা বলেন। যার যা কাজ নয় তিনি তা নিয়ে ব্যস্ত হন। কথা বলেন। অতিকথনে সমস্যার সৃষ্টি হয়। মানুষ বিভ্রান্ত হয়। ভারসাম্য থাকে না। বিরোধী পক্ষ সমালোচনা করে আরও বাজেভাবে। আওয়ামী লীগ অভিজ্ঞ পোড় খাওয়া একটি রাজনৈতিক দল। এ দলে নেতার অভাব নেই। নেতারা কথা বলবেন এটাই স্বাভাবিক। তাই বলে যার যখন যা মনে আসে তা বলা ঠিক নয়। একটা সমন্বয় দরকার। প্রয়োজনে নির্ধারণ করে দেওয়া দরকার কে কথা বলবেন দল নিয়ে আর কার দায়িত্ব সরকারে। ভোটের আগে বিভ্রান্তির অবকাশ নেই। দেশে-বিদেশে নানামুখী ষড়যন্ত্র আছে। সেসব ষড়যন্ত্রের জবাব দিতে হবে প্রস্তুতি নিয়ে। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মেলে ধরতে হবে কঠিন সত্যগুলো। কঠোর ভাষায় জবাব দিতে হবে সব গুজব ও মিথ্যাচারের। বুঝতে হবে সবকিছুর একটা শৈল্পিক ভাবধারা আছে।
লেখক : সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন । সূএ : বাংলাদেশ প্রতিদিন